chirir-vutta-pic
মোহাম্মাদ মানিক হোসেন চিরিরবন্দর(দিনাজপুর)প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের বৃহত্তর চিরিরবন্দরে বেশি লাভের আশায় ধান ছেড়ে লাভজনক ফসল ভুট্টা আবাদে ঝুঁকছে চাষিরা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুড়ে দেখা যায় চাষিরা গত এক মাস ধরে ভুট্টা পরিচর্য়ায় ব্যাস্ত সময় পার করেছে। তারা জানান, ভুট্টা আবাদে খরচ কম, ফলন বেশি। বাজারে দামও ভালো পাওয়া যায়। বোরো ধান আবাদের তুলনায় ভুট্টা আবাদে সেচ ও পরিচর্যা খরচ তুলনামূলক অনেক কম।
সম্প্রতি সরেজমিনে চিরিরবন্দরের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠজুড়ে ভুট্টাক্ষেত। যেসব মাঠ গত বছরও বোরো ধানে পূর্ণ ছিল সেগুলো এবার সবুজ ভুট্টায় ভরে আছে। সাতনালা গ্রামের কৃষক মো: জাকির হোসেন জানান, জমি চাষ দিয়ে ভুট্টা রোপণ করার পর আর তেমন কাজ নেই। পরে এক বা দু’বার সেচ দিলেই হয়।তাছাড়া ভুট্টার ফলন ও পুষ্টি বেশি। পরিশ্রমও কম। ধানের তুলনায় ভুট্টায় লাভ বেশি এবং ভুট্টার চাহিদাও দেশ-বিদেশে সমানভাবে রয়েছে।
উপজেলা কৃষিসম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর ৭ শত ৮০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। যা অর্জিত হয়েছে ১৮ শত ৫০ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরের তুলনায় তিন গুন বেশি। এছাড়া ২০১৬ সালে ভুট্টা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ শত ৩৫ হেক্টর জমি। যার অর্জিত হয়ে ছিলো ৫ শত ৮০ হেক্টর জমিতে । গত বছরের তুলনায় এ বছর এ আবাদের লক্ষমাত্রা বেড়েছে ১ শত ৪৫ হেক্টর জমি। যার অর্জিত বেড়েছে ১২ শত ৭০ হেক্টর জমিতে।
আলোকডিহি ইউনিয়নের গছাহার গ্রামের কৃষক সোহেল রানা জানান, ভুট্টা লাভজনক ফসল। প্রতিবিঘা ভুট্টা আবাদ করতে খরচ হয় ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা। বিঘায় ফলন হয় ২২-৩০ মণ। আগাম উঠলে প্রতিমণ ভুট্টা ৫০০-৮০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হবে। একই ইউনিয়নের বেলাল হোসেন বলেন, তিনি সারাবছরের জন্য গোখাদ্য এবং জ্বালানি পেয়ে যান। মেশিনের মাধ্যমে গাছ থেকে ভুট্টা ছাড়ানোর পর আটি/শাসগুলো স্থানীয় চা দোকানদাররা জ্বালানি হিসেবে ক্রয় করেন।
তেতুঁলিয়া গ্রামের কৃষক মো. মকবুল হোসেন জানান, ধানের আবাদ কমিয়ে লাভের আশায় গম ও ভুট্টা চাষ করছেন। চলতি মৌসুমে গমের দাম ভালো পাওয়া গেলে আগামীতেও গম চাষ করবেন তিনি। নশরতপুর গ্রামের কৃষক জমির উদ্দিন বলেন, ধানের চেয়ে গম ও ভুট্টা চাষে খরচ ও পরিশ্রম কম লাগে। গমের দামও বেশি। তাই গম উৎপাদনে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো:মাহমুদুল হাসান জানান, ভুট্টা লাভজনক ফসল চিরিরবন্দর উপজেলায় ধানের পরে ভুট্টার স্থান এ বছর ভুট্টার ফলন অনেক ভালো। তাছাড়া ধানের চেয়ে ভুট্টার সেচ সুবিধা অনেক বেশী। আগামী দিনে চাষীরা আরও বেশি করে ভুট্টার চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *