ঝালকাঠি প্রতিনিধি :
ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার পাটিকেলঘাটা ইউনিয়নে নিজ বাড়িতে ২০২১ সনের ৭ অক্টোবর রাতে খুন হন হাসিনা বেগম নামের এক গৃহিনী।

ঘটনার দু’দিন পর ১০ অক্টোবর নিহতের ছেলে ইউপি সদস্য রিপন জমাদ্দার বাদী হয়ে মায়ের হত্যার বিচার চেয়ে কাঠালিয়া থানায় একটি মামলা (নম্বর-৪) দায়ের করেছিলেন। ঐ মামলায় যাদেরকে আসামী করা হয়েছে তারা হলো কাঠালিয়ার জনি হাওলাদার, সাগর খান, জহির খান এবং প্রিন্স খান। এছারাও অজ্ঞাত আরো ৯ জনকে আসামী করা হয়।

এদিকে কাঠালিয়া থানায় রুজু হওয়া ঐ মামলায় যাদেরকে আসামী করা হয়েছে তাদেরকে নির্দোষ দাবী করে গত ৬ জুন সোমবার ঝালকাঠি টেলিভিশন সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ করেছে এক নারী। খুন হওয়া হাসিনা বেগমের বোন পরিচয় দিয়ে খাদিজা বেগম নামের এই নারী সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেছেন।

লিখিত বক্তব্যে খাদিজা জানিয়েছেন, ‘পাটিকেলঘাটা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রিপন জমাদ্দারের দায়ের করা হত্যা মামলার এজাহারে প্রকৃত আসামীদের বাইরে রেখে নাটক সাজানো হয়েছে। মামলার বাদি রিপন ও তার বাবা জালাল জমাদ্দার এই খুনের সাথে সরাসরি জড়িত বলেও দাবি করেছেন খাদিজা।’

কিন্তু খাদিজার সংবাদ সম্মেলনের সকল তথ্য মিথ্যে দাবি করেছেন খুন হওয়া হাসিনার ছেলে রিপন। শুধু মিথ্যে তথ্যই নয়। রিপন বলেন, ‘খাদিজা নামে তার মায়ের (হাসিনার) কোনো বোন নেই।’

ঘটনার বিবরন দিয়ে সোমবার ১৩ জুন ঝালকাঠিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহত হাসিনা বেগমের ছেলে রিপন জমাদ্দার। এসময় গনমাধ্যম কর্মীদের রিপন জানান, ‘খাদিজা নামের যেই মহিলা আমার মায়ের বোন পরিচয় দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যে তথ্য দিয়েছে, সে আমার মায়ের বোন নয়। খাদিজা নামে আমার কোনো খালা নেই। প্রতারনার আশ্রয় নেয়া খাদিজা আমার মায়ের খুনীদের আত্মীয়। ঐ খাদিজা পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার ছোট শৌলা গ্রামের হাফিজুর রহমানের স্ত্রী।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইউপি সদস্য রিপন আরো বলেন, ‘সেদিন (৬জুন) সংবাদ সম্মেলনে খাদিজার পাশে আরো এক মহিলা বসা ছিলো, যা আমি বিভিন্ন পত্রিকায় দেখেছি। খাদিজার পাশে বসা ঐ মহিলার নাম লাইলী বেগম। সে আমার মা হত্যা মামলার প্রধান আসামী জনি হাওলাদারের মা।’

খুন হওয়া হাসিনা বেগমের ছেলে রিপনের দাবি মিথ্যে কল্পকাহিনী সাজিয়ে মিডিয়া কর্মীদের কাছে অসত্য তথ্য দিয়ে প্রশাসন সহ সকলকে বিভ্রান্ত করছে আসামী পক্ষ। রিপন প্রশাসনের কাছে তার মায়ের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে ঘটনা অনুসন্ধান করতে গিয়ে ১৩ জুন বিকেলে খুন হওয়া হাসিনার জাতীয় পরিচয়পত্র এবং তার বাবার ওয়ারিশ সনদপত্র। তাতে দেখা যায় খাদিজা বেগম নামের ঐ নারী হাসিনার বোন নয়।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর মধ্যরাতে হাসিনার নিজ ঘরে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ঐ সময় ডাকাতদের আঘাতে হাসিনার মৃত্যু হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *