তাজিদুল ইসলাম লাল, রংপুর ব্যুরো
রংপুর মহানগরীর ঘাঘট নদী থেকে বালু উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে ‘দ্বীপ’ এলাকা বলে পরিচিত পানবাড়ি এলাকার ব্রীজটি। একই সঙ্গে প্রতিনিয়ত বালু বোঝাই ট্রাক চলাচল করায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সড়কসহ সংযোগ সড়ক। এতে করে দুর্ভোগে পড়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। বালু বিক্রির বিষয়ে অভিযোগ কিংবা নিষেধ করলে তার উপর নেমে আসে মামলা ও হামলা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রংপুর মহানগীর ৩১নম্বর ওয়ার্ডের পানবাড়ি গ্রামে ঘাঘট নদী থেকে দীর্ঘদিন থেকে বালু উত্তোলন করে আসছেন একদল ব্যবসায়ী। এতে করে ওই ব্রীজ, সংযোগ সড়কসহ আশপাশের আবাদী জমি হুমকির মুখে পড়েছে। এমনকি নদী থেকে দীর্ঘদন বালু উত্তোলন করায় নদীর কিনারায় থাকা বাড়িও হুমকিতে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, এখানে যারা মাতা (প্রধান) মহৎ আছে তারা এখানে এসে ব্যবসা করতেছে। আমাদের বাসার সঙ্গে নদী, ওরা নদী থেকে বালু তুলতেছে। ওদের বললে বলে আমরা আমাদের নিজস্ব জমি থেকে বালু তুলতেছি তাতে আপনাদের কী? তোমরা বাঁধা দিতে পারবা না। ওদের টাকা পয়সা আছে ওদের জোর আছে, আমরা গরীব মানুষ, ওদের সঙ্গে প্রতিবাদ করতে পারবো না। আমরা অনেক চিলস্নাচিলিস্ন করি, বাঁধা দেই কিছু হয়না। পরে আমরা কছি, ভাই আপনারা ব্যবসা করেন আমাদের যেন ÿতি না হয়। আমাদের বাড়ি ঘর ভাঙ্গলে যা ব্যবস্থা নেওয়া লাগে আমরা নেবো।
অপর একজন জানান, ব্রীজের পাশের পয়েন্টে ম্যাজিষ্ট্রেট ৫ থেকে ৭ বার এসেছিল, পুলিশের তো হিসেব নাই। রাস্ত্মার জন্য অভিযোগ যায়, পুলিশ আসে, পুলিশ আসি বলে সরকারি রাস্ত্মা দিয়ে বালু যায় তাতে আপনাদের কী? এই মাটি বালু তো সরকারি কাজে যায়, সরকারি রাস্ত্মায় যায় আপনারা বাঁধা দিবেন কেন? তিনি বলেন, আমার স্বামী রিক্সা চালায়, রাস্ত্মা ভাঙ্গা থাকায় রিক্সা নিয়ে বাড়িত আসতে পারে না।
আরাজি ধর্মদাস এলাকার এক অটোচালক বলেন, বালু উবাইতে উবাইতে রাস্ত্মা ভাঙ্গি ফেলাইছে। চুরমাচার হইছে। যাওয়াই তো যায় না। কত এক্সিডেন্ট হওছে। এ্যালাই চারজন লোক আহত হয়া হাত ভাঙ্গি পড়ি আছে।
পানবাড়ি পূর্বপাড়ার বাসিন্দা হামিদুর রহমান বলেন, যখন পুল (সেতু) পার হয় তখন গাড়ি গড্ডি গড্ডি পড়ি যায়। একে দোলা বাড়িত। কারো হাত ভাঙ্গে কারো পাও ভাঙ্গে। দারগা ওসিক বলতেছি, কাউন্সিলরক বলতেছি তারা গুরম্নত্ব দেয় না। তখন আমি বলছি, টাকা ভাগ খান নাকি, এই অবস্থা। আনছারম্নল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বলেন, বালু তোলা বন্ধে আমরা মানববন্ধন করেছি, বিÿোভ করেছি, বাঁধা দিয়েছি এজন্য আমাকে এক নম্বর আসামী করে একটি চাঁদাবাজি মামলা দেয়া হয়েছিল। আমরা সবাই জামিন নিয়েছি।
মামলার বাদী আলম জানান, আমি যখন বালু তুলছিলাম সেগুলো সরকারি জায়গায় দেয়া হছিল। বালু তোলার কারণে চাঁদা বাদী করায় মামলা করা হয়েছে।
৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছামছুল হক বলেন, শুনেছি বালু উত্তোলন করা হয়। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ নিয়ে জেলা প্রশাসক আসিব আহসান জানান, মেট্রোপলিটন এলাকায় সরকারিভাবে কোন বালু মহল নেই। যদি অবৈধভাবে কেউ বালু উত্তোলন করে থাকে তাহলে সেটার ব্যবস্থা নিবে মেট্রোপলিটন পুলিশ। তারা আমাদের কাছে সহযোগিতা চাইলে আমরা সহযোগিতা করবো।
এ নিয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাজ্জাদ হোসেন জানান, এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে আমরা অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নিবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *