এসএম আব্রাহাম লিংকন
বঙ্গবন্ধুর জীবন বন্ধুর ছিল এ কথা কারোরই অজানা নয়। তার রাজনৈতিক লড়াইয়ের জীবন ছিল স্রোতপ্রবল। আমরা জানি, তিনি প্রত্যাশিত আয়ুষ্কালকে অতিক্রম করতে পারেননি, ঘাতকের বুলেট তার চলাকে থামিয়ে দিয়েছিল। তিনি বেঁচে ছিলেন মাত্র ৫৫ বছর। এ ৫৫ বছরে তার জেলজীবন ছিল প্রায় ১৪ বছর, যা দিনের হিসাবে ৪ হাজার ৬৮২ দিন অর্থাৎ মোট আয়ুষ্কালের প্রায় এক-চতুর্থাংশ। এ সংক্ষিপ্ত জীবনে তিনি ব্রিটিশবিরোধী রাজনীতি, পাকিস্তান আন্দোলন এবং একটি নতুন দেশের জন্মের লক্ষ্যে মহিরুহ মুসলিম লীগ থেকে বেরিয়ে এসে পৃথক সংগঠন নির্মাণ ও তার বিকাশে অনবদ্য অবদান রাখেন। যে সংগঠন ভাষা, স্বাধিকার, সংস্কৃতির জাগরণ ও শিক্ষা আন্দোলন গড়ে তোলে।
একটি নতুন রাষ্ট্র তার জন্মের মাত্র ২৩ বছরের মাথায় সে রাষ্ট্র ভেঙে নতুন এক রাষ্ট্র সৃষ্টি অনন্য কর্ম, যা তিনি করতে পেরেছিলেন। শুধু তাই নয়, সমগ্র বাঙালি জাতিসত্তাকে তিনি এক সুতোয় বাঁধতে পেরেছিলেন।
এজন্য তাকে ছুটতে হয়েছে শহর থেকে গ্রামে, গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। তিনি যখনই কারাগার থেকে বেরিয়ে আসতেন, তখনই ছুটেছেন গ্রাম-নগরে। তিনি যে শুধু নিজেই ছুটেছেন শুধু তাই নয়, সঙ্গে একটি শক্ত বলয় তৈরি করে ঘুরেছিলেন। একদল বুদ্ধিদীপ্ত রাজনীতিকের সমাবেশ ঘটিয়েছিলেন রাজনীতিতে। শেরেবাংলা, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী, আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশদের যেমন স্নেহসান্নিধ্য পেয়েছেন, তেমনি তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কামরুজ্জামান, ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর মতো সৎ, সাহসী ও মেধাবী রাজনীতিবিদদের তার শক্ত অনুসারী হিসেবে পেয়েছেন। তিনি পঞ্চাশ দশকের শেষ দিক থেকে সূর্যের মতো বলয় তৈরি করেন। আর তাকে ঘিরেই গ্রহ-উপগ্রহের মতো তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ মনসুর আলী, কামরুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন মনসুররা আবর্তিত হতে থাকেন।
পাকিস্তান সৃষ্টির পর পাকিস্তানের শাসকদের অবহেলায় উত্তর জনপদের নাগরিকরা অনেক পিছিয়ে পড়েছিল। উত্তর জনপদের মানুষের মানবেতর জীবন ছিল এবং তারা সহজ ও সরল—তা বঙ্গবন্ধু খুব ভালো করে জানতেন। তার মাথায় সমগ্র বাংলাদেশ থাকলেও তিনি উত্তর জনপদকে গভীরভাবে অনুভব করতেন, যা তার উত্তরাঞ্চলের সভা-সমাবেশগুলোয় দেয়া বক্তব্যগুলো প্রমাণ করে।
উত্তরবঙ্গে বঙ্গবন্ধুর প্রথম আগমন ছিল ১৯৪৬ সালে রংপুরে আকস্মিক সফরের মাধ্যমে। তখনো পাকিস্তানের জন্ম হয়নি। তবে পাকিস্তানের জন্মের আয়োজন চলছিল। তখন দেশভাগের আয়োজনে সমগ্র উপমহাদেশ টালমাটাল। বঙ্গবন্ধু তখন ছাত্রনেতা সোহরাওয়ার্দী ও শেরেবাংলার স্নেহসান্নিধ্যের মানুষ। তিনি তাদের খুব কাছে থেকে দেখেছেন। তিনি পাকিস্তান আন্দোলন প্রত্যক্ষ অবলোকন করেছেন। নিজে অংশ নিয়েছেন সংগ্রামের নানা পর্বে। দেশভাগের আগে বিভাজনের রাজনীতিতে বিভিন্ন এলাকার এমপি-মন্ত্রীরা অনেকেই সে সময় চড়া দামে বিক্রি হচ্ছিলেন। এ রকম সময় শেখ মুজিবুর রহমানকে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী চিঠি দিয়ে রংপুর পাঠিয়েছিলেন মুসলিম লীগের এমএলএ খান বাহাদুরের কাছে। তাকে কলকাতায় নিয়ে যেতে। সেটিই ছিল তার জীবনের প্রথম রংপুর আগমন।
শেখ মুজিবুর রহমানের প্রথম রংপুর সফর সুখকর ছিল না। বিড়ম্বিত ও অনাহার যাত্রা ছিল। তিনি সেদিন রংপুরে কিছু না খেয়ে কলকাতায় ফিরেছিলেন। সেদিনের ঘটনায় তার মনঃকষ্ট ছিল, যা আমাদের জন্য লজ্জার। কারণ রংপুরের জনমানুষের সাধারণ সংস্কৃতি অতিথিপরায়ণতার। বঙ্গবন্ধু তার প্রথম রংপুর সফরের অভিজ্ঞতার কথা অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে ইনভার্টেড কমা ব্যবহার করে সে কষ্টের প্রকাশ ঘটিয়েছেন। উদ্ধৃত লেখাটি আমাদের জন্য লজ্জার হলেও বঙ্গবন্ধুর সেই কষ্টের কথাগুলো পাঠকের জানানোর জন্য উদ্ধৃত করছি—আমি বেকার হোস্টেলে এসে একটা হাত ব্যাগে কয়েকটা কাপড় নিয়ে সোজা স্টেশনে চলে আসলাম। খাওয়ার সময় পেলাম না। যুদ্ধের সময় কোথাও খাবার পাওয়াও কষ্টকর। ট্রেনে চেপে বসলাম। তখন ট্রেনের কোনো সময়ও ঠিক ছিল না, মিলিটারিদের ইচ্ছামতো চলত। রাত ৮টায় রংপুর পৌঁছাব এটা ছিল ঠিক সময়, কিন্তু পৌঁছালাম রাত ১টায়। পথে কিছু খেতেও পারি নাই, ভীষণ ভিড়। এর আগে রংপুরে আমি কোনো দিন যাই নাই। শুনলাম স্টেশন থেকে শহর তিন মাইল দূরে। অনেক কষ্ট করে একটা রিকশা জোগাড় করা গেল। রিকশাওয়ালা খান বাহাদুর সাহেবের বাড়ি চিনে, আমাকে ঠিকই পৌঁছে দিল। আমি অনেক ডাকাডাকি করে তাকে তুললাম, চিঠি দিলাম। তিনি আমাকে জানেন। বললেন, ‘আগামীকাল আমি যাব। আজ ভোর ৫টায় যে ট্রেন আছে সে ট্রেনে যেতে পারব না।’ আমি বললাম, ‘তাহলে আপনি চিঠি দিয়ে দেন, আমি ভোর ৫টার ট্রেনেই ফিরে যেতে চাই।’ তিনি বললেন ‘সেই ভালো হয়।’ আমাকে বললেন , না কিছু খাব কিনা, পথে খেয়েছি কিনা। বললেন ‘এখন তো রাত ৩টা বাজে, বিছানার কি দরকার আছে?’ বললাম, ‘দরকার নাই, যে সময়টা আছে বসেই কাটিয়ে দিব। ঘুমালে আর উঠতে পারব না খুবই ক্লান্ত।’ এদিকে পেট টনটন করছে, অন্যদিকে অচেনা রংপুরের মশা। গত রাতে কলকাতায় বেকার হোস্টেলে ভাত খেয়েছি। বললাম, ‘এক গ্লাস পানি পাঠিয়ে দিলে ভালো হয়। তিনি তার বাড়ির পাশেই কোথাও রিকশাওয়ালারা থাকে, তার একজনকে ডেকে বললেন, ‘আমাকে যেন ৫টার ট্রেনে দিয়ে আসে। আমি চলে এলাম সকালের ট্রেনে। কলকাতায় পৌঁছালাম আরেক সন্ধ্যায়। রাস্তায় চা বিস্কুট কিছু খেয়ে নিয়েছিলাম। রাতে আবার হোস্টেলে এসে ভাত খাই।’ (অসমাপ্ত আত্মজীবনী পৃষ্ঠা-৩৩ -৩৪ লেখক: শেখ মুজিবুর রহমান)
বঙ্গবন্ধু খান বাহাদুর সাহেবের নামটি লিখেননি। জানি না, তিনি সেটি ইচ্ছাকৃতভাবে এড়িয়ে গেছেন কিনা। এসব খান বাহাদুরেরা উত্তরবঙ্গের সংস্কৃতির মানুষ ছিলেন না। রংপুরের মানুষজন অতিথিপরায়ণ। কেউ একজন কারো বাড়িতে এসে কৌশলে আতিথ্য গ্রহণে বিরত হলেও তাকে ন্যূনপক্ষে পান-সুপারি খেয়ে যেতেই হয়। এটি সংস্কৃতি ও আতিথ্যের প্রতীক। বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধুও তা বিশ্বাস করতেন। তিনি রংপুরের মানুষের অতিথিপরায়ণতা জানতেন। জানতেন রংপুরের মানুষের সারল্যভরা সংস্কৃতির কথাও। তিনি খান বাহাদুরের অনাতিথ্যকে রংপুরের সংস্কৃতি ভাবেননি। যার প্রকাশ আমরা পাই তার জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনাকে রংপুরের সন্তান ড. ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে পাত্রস্থ করার মধ্য দিয়ে। তিনি আমাদের সারল্যের সংস্কৃতি জানতেন বলেই কন্যাকে উত্তর জনপদে দিয়েছেন। ফিরে আসি তার উত্তরবঙ্গ সফরের কথায়—
বঙ্গবন্ধুর উত্তরাঞ্চলের সফরগুলোকে আমরা মোট তিন ভাগে ভাগ করতে পারি। প্রথম পর্ব দেশভাগ কাল ১৯৪৬ সাল, যার কথা এরই মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্ব ১৯৫২-৭০ এবং তৃতীয় পর্ব বাংলাদেশে অভ্যুদ্বয়ের পর ১৯৭২-৭৫ পর্যন্ত। উত্তরাঞ্চলে ৭৬টি সভার খরব পাওয়া যায়। সফরগুলোর মধ্যে রাজশাহী জেলা নয়বার। যার মধ্যে তিনি ১৯৫৩ সালে রাজশাহী জেলে ৩০ দিন দেওয়ানি কয়েদ হিসেবেও ছিলেন। উত্তরবঙ্গের কুড়িগ্রামে তার শেষ সফর ছিল ১৯৭৪ সালে চিলমারীতে, আর ১৯৭৫ সালে নাটোরে। বঙ্গবন্ধু পাবনায় ১০ বার, সিরাজগঞ্জে তিনবার, নওগাঁয় তিনবার, নাটোর ১১ বার, চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুবার, বগুড়ায় নয়বার, জয়পুরহাট দুবার, দিনাজপুরে ছয়বার, ঠাকুরগাঁওয়ে তিনবার, পঞ্চগড়ে দুবার, রংপুর জেলায় নয়বার। এর মধ্যে কুড়িগ্রামে (লালমনিরহাটসহ) চারবার। গাইবান্ধায় তিনবার, নীলফামারীতে তিনবার ভ্রমণ করেন। পাকিস্তানের গোড়ায় তিনি উত্তরে সফর করতে না পারলেও ১৯৫২ সাল থেকে এ সফরগুলো শুরু করেন।
বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি সফরই ছিল রাজনৈতিকভাবে তাত্পর্যপূর্ণ। বঙ্গবন্ধু উত্তরবঙ্গকে গভীরে উপলব্ধি করেছেন। সহজ-সরল মানুষগুলোর কথাকে বিবেচনায় নিয়েছিলেন। উত্তরবঙ্গকে যাতে এগিয়ে নেয়া যায় সেজন্য সুদূরে চিন্তা করেছেন। গরিবের কথা চিন্তা করেছেন। ১৯৬৪ সালেই তিনি কৃষকের খাজনা মওকুফের দাবি করেছিলেন। ২ মে গাইবান্ধা ক্লাব মাঠের জনসভায় তিনি এ দাবি তুলেছিলেন। ৯ এপ্রিল, ১৯৬৬ বগুড়া ও রংপুরে কর্মী সমাবেশে ছয় দফা নিয়ে কথা বলেন। বগুড়ায় বলেন, নির্যাতনের কষাঘাতই দেশবাসীকে সাফল্যের স্বর্ণদ্বারে পৌঁছে দেবে। একই দিনে তিনি রংপুরের বিড়ি শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন জানান।
১৯৬৬ সালের ১১ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু দিনাজপুরে প্রথম সফর করেন। ১৯৬৬ সালে ছয় দফা দিলে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার এবং তার সাঙ্গপাঙ্গ বঙ্গবন্ধুকে ভারতের দালাল হিসেবে আখ্যায়িত করেন। বঙ্গবন্ধু দিনাজপুরের সভায় পাকিস্তানি শাসকদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘আমরা জনগণেরই দালাল, আর জনতার দরবারই শক্তিশালী আদালত।’
১৯৬৯-এর ৯ অক্টোবর লালমনিরহাটে কুড়িগ্রাম মহকুমা আওয়ামী লীগের এক কর্মী সভায় তিনি পাটচাষীদের ন্যায্যমূল্য দেয়ার দাবি করেন। বঙ্গবন্ধু গাইবান্ধায় কর্মী সমাবেশে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে প্রদেশের অবশিষ্ট অংশের যোগাযোগ ব্যবস্থার আশু উন্নয়ন দাবি করেন এবং যমুনা নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের কথা বলেন। তিনি উত্তরবঙ্গের সভায় রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের কথাও বলেন।
একই সালের ১২ অক্টোবর ঠাকুরগাঁওয়ে বলেন, ২৩ বছরে বাংলার ধন-সম্পদ যতটা লুটপাট হইয়াছে, ২০০ বছরের বৃটিশ শাসনেও তা হয়নি।
সত্তরের নির্বাচনে ৩০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু রাজশাহী সফরে আসেন। সেখানে তিনি মাদ্রাসা ময়দানে বিশাল জনসভায় বক্তব্য প্রদান করেন। যে মঞ্চটি আয়ুব খানের জন্য নির্মিত হয়। ওই মঞ্চে তিনি বলেন, ‘রাখে আল্লা মারে কে? যে আইয়ুব একদা দম্ভ করিয়া আমাকে চিরদিনের জন্য বন্দি করিয়া রাখা হইবে বলিয়া ছিল, ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলাইতে চাহিয়াছিল। তিনি আজ কোথায়? তাহারই জন্য নির্মিত মঞ্চ হইতে দেশবাসী আজ মুজিবের বক্তব্য শুনিতেছে।’
১৯৭০ সালের ১০ মার্চ বঙ্গবন্ধু রংপুর কালেক্টরেট ময়দানে বিশাল সমাবেশে বলেন, অন্যায়-অবিচার অবসান ঘটাইয়া আমাদের ন্যায্য পাওনা বুঝিয়া লওয়াই ছয় দফার লক্ষ্য। তিনি এও বলেন, আমরা কাউকে ঠকাইতে চাই না, নিজেরাও ঠকিতে চাই না। ২৩ অক্টোবর ১৯৭০ বঙ্গবন্ধু বিহারি অধ্যুষিত সৈয়দপুরে স্থানীয় বাংলা কলেজ মাঠে নির্বাচনী জনসভা করেন। সেখানে এমপিএ প্রার্থী ছিলেন শহিদ ডা. জিকরুল হক। ওই সভায় তিনি বলেন ‘বাঙ্গালীরা শোষকদের নির্মূল করিবেই’। তিনি এও বলেন, ছয় দফা আদায়ে তিনি প্রয়োজনবোধে মৃত্যুবরণ করিতেও দ্বিধা করিবেন না। পরদিন নীলফামারীর ডোমারে মুসলীম লীগ নেতা কাজী কাদেরের আসনে বঙ্গবন্ধু এক জনসভায় বলেন, ‘জয় বাংলা স্লোগান কোনো রকমেই ইসলামবিরোধী নয়। জয় বাংলা মানেই বাঙ্গালীর বিজয়। তিনি বলেন, যারা বাঙ্গালীর বিজয় চায় না তারাই জয় বাংলার বিরোধী।’ তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান আন্দোলনের সময় জিন্দাবাদ ধ্বনি ব্যবহার করা হয়। এর আগে জিন্দাবাদ ধ্বনি উচ্চারণ করা হতো না।’ এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জয়বাংলা স্লোগান অদূরভবিষ্যতে পূর্ব বাংলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত ছড়িয়ে যাবে।’
১১ মার্চ, ১৯৭০ বগুড়ার সভায় বঙ্গবন্ধু শোষক ও ভূস্বামীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু একাধিকবার উত্তরবঙ্গে এসেছিলেন বিশেষত ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে ব্যাপক সফর করেন। যার মধ্যে ২৬ এপ্রিল কুড়িগ্রামের জনসভায় দুর্নীতিবাজ ও রিলিফ চোরদের তিনি হুঁশিয়ার করে দেন। উত্তরবঙ্গের সমাবেশে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, যমুনা নদীর ওপর ব্রিজ করার। গণতন্ত্রের অপব্যবহার নিয়েও কথা বলেন, তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে অবস্থান নিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন।
১৯৭৫ সালে ১২ এপ্রিল নাটোর সফরই উত্তরবঙ্গে বঙ্গবন্ধুর শেষ সফর ছিল। এরপর ঘাতকের বুলেটে থেমে যায় তার জীবনের পথচলা। আর আমরা উত্তরের মানুষেরা ডুবে যাই এক অসীম অন্ধকারে।
৥৥ লেখকঃ এসএম আব্রাহাম লিংকন; একুশে পদকপ্রাপ্ত আইনজীবী ও রাজনীতিক,প্রতিষ্ঠাতা, উত্তরবঙ্গ জাদুঘর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *