আব্দুল সাত্তার টিটু চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে সন্ধ্যায় ঘোষণা দিয়ে ভোররাত্রে ছুরিকাঘাত করে যুবক হত্যা।মূল আসামী রাজীব সহ তার তিন সহযোগী’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
২৯ মে সোমবার রাঙ্গামাটি জেলার কোতোয়ালী থানাধীন একটি আবাসিক হোটেল ও নগরীর কদমতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকা হতে পৃথক অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন ১। আবু তাহের রাজীব (২৩), পিতা-মোঃ আবুল হাসেম, থানা-হালিশহর, চট্টগ্রাম, ২। দেলোয়ার হোসেন জয় (২৭), পিতা-মোঃ আনোয়ার হোসেন, সাং-সংসেরাবাদ, থানা-সদর, জেলা-লক্ষীপুর এবং ৩। মোঃ রায়হান সজীব (২২), পিতা- মোঃ ইব্রাহিম, সাং-এরশাদ চেয়ারম্যান বাড়ি, থানা-হালিশহর, চট্টগ্রামকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামীদের দেয়া তথ্যমতে নগরীর কদমতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকা হতে আসামী আবুল হাসনাত রানা (৩০), পিতা-আবুল হাসেম, সাং-নয়াবাজার, থানা-হালিশহর, চট্টগ্রাম।
র‌্যাব-৭ সিনিয়র সহকারী পরিচালক মিডিয়া মোঃ নুরুল আবছার এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
র‌্যাব জানান,গত ২৮ মে ২০২৩ইং তারিখ দিবাগত রাত আনুমানিক ০০৩০ ঘটিকার সময় অজ্ঞাতনামা একব্যক্তি চট্টগ্রাম মহানগরীর নয়াবাজার এলাকার একটি কারখানার গেইটের সামনে প্রশ্রাব করলে কারখানার নৈশ প্রহড়ী ভিকটিম এর বড় ভাই মফিজ (৪০) তাকে বাধা প্রদান করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উক্ত ব্যক্তি নৈশ প্রহরী মফিজকে বলে, ‘এটা সরকারী জায়গা তুই বাধা দেওয়ার কে’ এই বলে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আসামী আবু তাহের রাজীব, ওসমান, আবুল হাসান, এবং কতিপয় অজ্ঞাতনামা আসামীরা উক্ত জায়গায় এসে কথা কাটাকাটিতে লিপ্ত হয়। বড় ভাইয়ের সাথে কথা কাটাকাটির শব্দ শুনে ভিকটিক আজাদুর রহমান ঘটনাস্থলে গেলে তার সাথেও কথা কাটাকাটি এবং একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি হয়। পরবর্তীতে আসামীরা ভিকটিমকে দেখে নিবে বলে হুমকি প্রদান করে স্থান ত্যাগ করে। পরবর্তীতে গত ২৮ মে ২০২৩ইং তারিখ ভোর আনুমানিক ০৪৫০ ঘটিকায় ভিকটিম আজাদুর রহমান দোকান হতে নাস্তা আনার জন্য বাসা হতে বের হয়। পথিমধ্যে পাহাড়তলী থানাধীন নয়াবাজার পৌছালে পূর্ব হতে উৎপেতে থাকা আসামীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ভিকটিমকে একা পেয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে এলাপাথাড়ীভাবে পেটে, পিঠে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায়। ছুড়িকাঘাতের ফলে ভিকটিমের পেটের ভুরি বের হয়ে যায়। ভিকটিমের চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরবর্তীতে উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হতে চট্টগ্রাম জেলার পাহাড়তলী থানায় ০৪ জন নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং ২২/৯৭ তারিখ ২৮ মে ২০২৩, ধারা ৩০২/৩৪। মামলা দায়েরের পর হতে আসামীরা আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
উল্লেখ্য, হাসপাতালে নেয়ার পথে মুমূর্ষ অবস্থায় মৃত্যু পথযাত্রী ভিকটিম তার ভাতিজা তারেকুর রহমান এর নিকট তার উপর আক্রমণকারীদের নাম প্রকাশ করেন। ভিকটিম মৃত্যুর পূর্বে আরও বলে যান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আসামীরা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলাপাথাড়ীভাবে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেছে।
গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *