download

মোহাম্মদ মানিক হোসেন, চিরিরবন্দর(দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া খরস্রোতা ইছামতি নদীর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে এখন মরা ইছামতিতে পরিনত হয়েছে। সেই সাথে মানচিত্র হতে হারিয়ে যেতে বসেছে নদীর নামও।
শুধু তাই নয় ওই এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নীচে নেমে যাওয়ায় খরা মৌসুমে খাবার পানি বা জমিতে সেচ দেয়ার জন্য ১০ থেকে ১৫ ফুট মাটির নীচে পাম্প স্থাপন করে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। হারিয়ে যাওয়া নদীটির অস্তিত্ব টিকে রাখার ব্যাপারে কারো কোন আগ্রহ বা উৎসাহ না থাকলেও নদী দখলকে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়ত ঘটছে অনেক দুর্ঘটনা। বর্ষাকালে নদীতে স্রোত থাকলেও খরা মৌসুমে ফসলের বিস্তীর্ন মাঠ।
রবি শষ্য থেকে শুরু করে ইরি, বোরো, পাট, গম, ভুট্টাসহ সবুজের সমারোহে ভরপুর নদীর বুক। হঠাৎ দেখে কেউ বুঝতে পারবেনা এটি নদী। কথিত আছে এই ইছামতি নদীতে সারা বছর স্রোত থাকায় নৌকায় করে জেলেরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতো। কালের আবর্তে নদীটি ক্রমান্বয়ে ভরাট হয়ে এখন মরা ইছামতিতে পরিনত হয়েছে।
ফলে ওই এলাকার অনেক জেলে বেকার হয়ে বাধ্য হয়ে পেশা পরিবর্তন করেছে। কেউ বা হয়েছে দিনমজুর আবার কেউ হয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিক। নদীর ধারের জেলে আমিনুল (৬৫) হীরেন (৬৭) জয়দেব (৭০)সহ আরো অনেকে বলেন, সারা বছর নদীতে স্রোত থাকলে হয়তো আমাদের প্রজন্মরা এই নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতো ও এলাকার লোকজন তৃপ্তি সহকারে মাছ খেতে পারতো।
অনেকে অভিযোগ করে বলেন, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ভরাট নদী দখল করে আবাদি জমির ন্যায় সীমানা আইল দিয়ে পৈত্রিক সম্পত্তির মতো চাষাবাদ করছে। দিনাজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোক্তার হোসেন খাঁন বলেন, শুধু ইছামতি নদী নয় দিনাজপুর জেলার সব নদীর হালনাগাদ তথ্য জেলা প্রশাসককে দেয়া হয়েছে।
তবে এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ গ্রহনের আশ্বাস পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে চিরিরবন্দর নদী রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল জাকির জানান, নদী রক্ষা কমিটি বেশকিছু সিদ্ধান্ত হাতে নিয়েছে। হয়তো বাস্তবায়ন করতে কিছুদিন সময় লাগতে পারে। সচেতন এলাকাবাসীর দাবী নদীটি সংস্কার করলে হয়তো আবার পূর্বের ন্যায় ফিরে পাবে তার ঐতিহ্য। সেই সাথে জেলেরা ফিরে আসবে তাদের মূল পেশায় ও ভূগর্স্থ পানির স্তর স্বাভাবিক হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *