শফিউল আলম শফি,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ

কুড়িগ্রামের নাগেশশ্বরী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ শাহজাহান মানিকের বিরুদ্ধে সরকারী অর্থ আত্মসাত,ইচ্ছে মাফিক অফিস করা ও তার কাছে কাজ করতে আসা সাধারন নিরহ মানুষের সাথে চরম দুর্ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগে জানা যায়, নির্বাচন কমিশনের নিয়মানুযায়ী যে সকল ব্যক্তি ভোটার আইডি কার্ড পাননি বা হারিয়ে গেছে তারা ২০০টাকা ফি ও ৩০টাকা ভ্যাট ট্রেজারী চালানে জমা দিলে নির্বাচন কর্মকর্তা অনলাইনে তাদের ভোটার আইডির কপি প্রদান করে থাকেন। নাগেশ^রী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ট্রেজারী চালানে সেই টাকা জমা না দিয়ে নিজেই তার অফিসের রেজিষ্টার মুলে নগদ হিসাবে গ্রহন করেন। হাফিজুর রহমান পিতা লোকমান মিয়া,গ্রাম সাতানীপাড়া পশ্চিম নাগেশ^রী,আবুহানিফ পিতা হাসেম আলী গ্রাম সুখাতি,শহর আলী পিতা কোবাদ আরী গ্রাম শ্রীপুর, এরা সকলেই নির্বাচন কর্মকর্তার নিকট নগদ টাকা জমা দিয়ে তাদের ভোটার আইডি কার্ডের কম্পিউটার কপি নিয়েছেন বলে জানান। নির্বাচন কর্মকর্তা গত ২৯/৭/১৭তারিখ থেকে ৩০/১২/১৭ পর্যন্ত অনুরুভাবে তিন শতাধিক ব্যক্তির নিকট থেকে প্রায় ৭০হাজার টাকা নগদ গ্রহন করলেও একটি টাকাও সরকারের কোষাগারে জমা না দিয়ে তা আতœসাৎ করেছেন। তার স্বাক্ষরিত অফিসিয়াল তথ্য প্রমানসহ দুই শতাধিক মানুষের নামের তালিকা এ প্রতিবেদকের হাতে সংরক্ষিত আছে। এ ছাড়া ২০১৭-১৮অর্থবছরে হালনাগাদ ভোটার তালিকা করা জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবালয় স্বারক নং- ৩৪৪তাং-৫/১০/১৭ মুলে শিক্ষদের পারিশ্রমিক বাবদ ৩,৪৯,৬৬৮টাকা, চৌকিদারদের পারিশ্রমিক বাবদ ৪২হাজার টাকা ও আনছার সদষ্যদের জন্য ২১হাজার টাকা দুই দফায় গত ৫/১০/১৭ ও ১৯/১/১৮তারিখে টাকা উত্তোলন করলেও তা আজ পর্যন্ত বিতরন করেন নাই। তবে নির্বাচন অফিসার ব্যংক থেকে টাকা তুলেছেন এ খবর জানার পর স্থানীয় কতিপয় শিক্ষক তার উপর চড়াও হলে সে বাধ্য হয়ে শুধু সেই শিক্ষকদের তাৎক্ষনিক পারিশ্রমিক দিয়েছেন। নাগেশ^রী আদর্শ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন,ভিতরবন্দ বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজু আহমেদ জানান,আমরা হালনাগাদ ভোটার তালিকার কাজ করেছি কিন্তু আজ পর্যন্ত পারিশ্রমিক পাই নাই। অপরদিকে ভিতরবন্দ ইউনিয়নের চৌকিদার মনোরঞ্জন বর্ম্মন বলেন,আমরা ডিউটি পালন করেছি কিন্তু একজন চৌকিদারও পারিশ্রমিক পাই নাই। একই অভিযোগ আনছার সদস্যরাও করেন। এছাড়া নির্বাচন কর্মকর্তা অফিসের আনুসাঙ্গিক খরচ না করে ভুয়া ভাউচার দিয়ে টাকা তুলে তা আতœসাৎ করেছেন বলে নির্ভর যোগ্য সুত্রে জানা গেছে। তার আচরন বিষয়ে ভিতরবন্দ ইউনিয়নের হামিদুল ইসলাম পিতা মোঃ মফিজুল ইসলাম,গ্রাম ডাকনীরপাঠ, অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার জন্ম ২১/৬/৮৩ সাল। আমি দীর্ঘ ১৬বছর ধরে নিয়মিত ভোট দেই। আমার ভোটার নম্বর ৪৯০২০৭১৯৫৮৬২, হাল নাগাদ ভোটার তালিকায় আমাকে মৃত দেখানো হয়েছে। এটি জানার পর নির্বাচন কর্মকর্তার অফিসে সংশোধন করতে গেলে তিনি ১৯দিন ধরে আমাকে ঘুরান এবং মোটা অংকের খরচ দাবী করেন। পরে আমার চাচা ভিতরবন্দ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ শফিউল আলমসহ অফিসে যাই এবং তাকে ভাই বলে সম্ভোধন করায় সে আমাদের সাথে চরম দুর্ব্যবহার করে এবং বলেন, ‘আমি প্রথম শ্রেনীর অফিসার আমাকে স্যার বলতে হবে। আমার অফিসে জুতা পায়ে প্রবেশ নিষেধ’। নাগেশ^রী বাসষ্টান্ডের মটর সাইকেল মেকানিক দুলাল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, আমার কলেজ পড়–য়া মেয়ে নির্বাচন কর্মকর্তাকে তার অফিসে আংকেল সম্ভোধন করায় তিনি আমার মেয়ের সাথে চরম খারাপ আচরন করেছেন। পরে মেয়েটি কাঁদতে কাঁদতে অফিস থেকে বেড় হয়ে যায়। দুলাল মিয়া বিষয়টি স্থানীয় লোকজনকে জানিয়েছেন। নাগেশ^রী পৌরসভার আশার মোড়ের অটো ড্রাইভার আব্দুল হামিদ অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচন অফিসে জুতা পায়ে প্রবেশ করায় নির্বাচন কর্মকর্তা আমাকে মারতে এসেছে। যোগাযোগ করা হলে নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ শাহজাহান মানিক বলেন, । আমি স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের প্রথম শ্রেনীর অফিসার । আমাকে অফিসে স্যার বলতে হবে। আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা। নাগেশ^রী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শংকর কুমার বিশ্বাস বলেন,তার আচরন খারাপ এ রির্পোট আমি পেয়েছি। সে দুর্নীতি করলে নির্বাচন সচিবকে লিখেন। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *