নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে রাজশাহীর সাবেক সচিব ড. মোয়াজ্জেম হোসেন এর বিরুদ্ধে এখনও শিক্ষা বোর্ড নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ উঠেছে। চলতি বছরের ৪ জানুয়ারী তাকে ওএসডি করা হয়েছিলো। তিনি বর্তমানে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে কর্মরত আছেন।
জানা গেছে, শিক্ষা বোর্ডে কর্মরত থাকা অবস্থায় নানা অনিয়ম দুর্নীতিসহ বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জাড়ান। সেই দ্বন্দ্বের জেরে মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই চলতি বছরের ১৭ অক্টোবর রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন তিনি।
অপরদিকে শহিদের সংখ্যা নিয়ে কটুক্তি করায় ড. মোয়াজ্জেম হোসেন এর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন জনৈক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আহসান উদ্দিন আহম্মেদ।
ড. মোয়াজ্জেম হোসেন এর করা মামলার ঘটনাটি শিক্ষা বোর্ড ও মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি পৃথকভাবে তদন্ত করেন। তদন্ত চলাকালীন সময়ে চাকুরী বিধির তোয়াক্কা না করে তার অধীনস্থদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

সংশ্লিষ্ট সুত্র থেকে জানা যায়, ১৯৬১ সালের শিক্ষা বোর্ড পরিচালনার সংবিধান মোতাবেক শিক্ষা বোর্ডে প্রেষণে নিয়োগের কোন বিধান নেই। এ বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্টে রিট-পিটিশন দাখিল করা হয় (নাম্বার ২৮৬৩ /২০২১) । মূলত এই রিটপিটিশন দায়েরের পর থেকে প্রেষনে নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মকর্তারা বোর্ডের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কুটকৌশল গ্রহণ করেন এবং সুযোগ খুঁজতে থাকেন কিভাবে তাদেরকে বেকায়দায় ফেলা যায়। এরই অংশ হিসেবে সাবেক সচিব মোয়াজ্জেম হোসেনের কক্ষে যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি একটি পূর্ব পরিকল্পিত ঘটনা যা ভিডিও ফুটেজ দেখলে এবং অন্যান্য তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করলেই স্পষ্ট হয়। ঐ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে মামলাটি দায়ের হয়েছে, সে মামলায় পিবিআই তদন্ত করে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে, বিবাদীরা সম্পূর্ণ নির্দোষ, তাছাড়া বোর্ড কর্তৃক যে তদন্ত কমিটি হয়েছে সে তদন্ত কমিটির রিপোর্টেও বলা হয়েছে যে বিবাদীরা কোন ফৌজদারি অপরাধ সংগঠিত করেন নাই বরং সাবেক সচিব মোয়াজ্জেম হোসেন, উপসচিব মোঃ ওয়ালিদ হোসেন কে কক্ষে আটকে রেখে ফৌজদারি অপরাধ করেছেন ।
এছাড়া বোর্ডের নিজস্ব চাকরিবিধি এস,আর ৬৫ এর ৭ নম্বর অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, বোর্ডের কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন মামলা করতে গেলে তাকে কর্তৃপক্ষের অনুমতি গ্রহণ করতে হবে এক্ষেত্রেও তিনি তা করেননি।
এদিকে উপসচিব প্রশাসন মোঃ ওয়ালিদ হোসেন সাবেক সচিব মোয়াজ্জেম হোসেন এর কক্ষে যে বিষয়টি নিয়ে জানতে গিয়েছিলেন সে বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত টিম প্রমাণ পেয়েছেন। তদন্তে মোয়াজ্জেম হোসেন যে কাগজ ফটোকপি করেছেন এটি একটি সরকারি দলিল এবং সরকারি তথ্য বাহিরে প্রকাশ করে অফিসের গোপনীয়তা তিনি ভঙ্গ করেছেন এটি স্পষ্টভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে।
একটি বিশ্বস্ত সুত্র বলছে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বর্তমান শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান এর সঙ্গে যোগসাজশে ড. মোয়াজ্জেম হোসেন বোর্ডের কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র ও সাংবাদিককে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করাচ্ছেন। এটি মুলত প্রেষণ ও বোর্ড কর্মকর্তাদের আভান্তরীন কোন্দল এবং হিংসাত্মক মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ।
এ বিষয়ে জানতে ড. মোয়াজ্জেম হোসেনকে মুঠো ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করে না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *